



Connect with like-minded individuals

أَوَلَمْ يَتَفَكَّرُوا فِي أَنفُسِهِمْ
তারা কি তাদের নিজেদের মধ্যে চিন্তা করে না?
সূরা রূম: ৮
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল—ঐতিহাসিক বরেন্দ্রভূমি। এই ভূমি শুধু ভৌগোলিক অঞ্চল নয়, এটি ইসলামী ঐতিহ্য, প্রাচীন জ্ঞানচর্চা ও তাওহীদের আলোকিত ইতিহাসের এক মহিমান্বিত সাক্ষী। এখানে রয়েছে সাহাবা যুগের ৬৯ হিজরীর প্রাচীন মসজিদ, রয়েছে অসংখ্য ঐতিহ্যবাহী মসজিদ, যা শুধু ইবাদতের স্থান নয়—ছিলো শিক্ষা, তালীম, তাজকিয়া ও সভ্যতার সূতিকাগার। ইসলামী ইতিহাসে মসজিদ মানেই জ্ঞানের বিদ্যালয়, আর মসজিদের আঙিনাই ছিলো মহাবিদ্যালয়। বাংলায় মুসলিম শাসনের সূচনা এ প্রভাতী ভূমি থেকেই। সুলতান আলাউদ্দীন হোসেন শাহের শাসনামল এ অঞ্চলের ইসলামী বিদ্যাচর্চার সোনালি অধ্যায়।
কিন্তু এই আলোর ইতিহাস দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আগ্রাসনে ধ্বংস হয়ে যায় মসজিদ, মাদরাসা, লাইব্রেরি ও জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রসমূহ। কুরআনের আলো যেন নিবে যেতে থাকে, শিক্ষার স্রোত থেমে যায়, এ উত্তরঅঞ্চল পরিণত হয় নীরবতা ও নিঃসঙ্গতার ভূমিতে—এক দীর্ঘ দুইশ বছরের অন্ধকার অধ্যায়।
এই অন্ধকার কাটাতে আল্লাহর বান্দারা আবারও জেগে ওঠেন। উলামায়ে দেওবন্দ নতুন উদ্যোগ নেন, শিক্ষার আলোকশিখা পুনরুজ্জীবিত হয়। প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে মাদরাসা, ফিরে আসে আশার আলো। কিন্তু উচ্চতর শিক্ষা, গবেষণা ও ইসলামী নেতৃত্ব গঠনে বিশেষায়িত একটি জামিআর প্রয়োজন থেকেই যায়—যা যুগের দাবি, সময়ের প্রয়োজন, উম্মাহর আশার কেন্দ্র। এই প্রয়োজন পূরণে এক আলোকিত উদ্যোগের সূচনা হয় উত্তরবঙ্গের প্রাণকেন্দ্র বগুড়ায়। উলামায়ে কেরামের পরামর্শে, শায়েখ মুফতী আব্দুল্লাহ নাজীব হাফীর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয় জামিআ সুফফাহ শারকিয়া।
প্রতিষ্ঠানটি উচ্চশিক্ষার একাধিক বিভাগ সুচারুরূপে পরিচালনার পাশাপাশি গবেষণা, রচনা, প্রকাশনা ও দাওয়াহমূলক বহুমুখী কর্মকাণ্ডে ইতোমধ্যে উজ্জ্বল ভূমিকা রেখে চলেছে। কর্ম ও সাধনার এই ধারাবাহিকতায় অল্প সময়েই অর্জন করেছে দেশ-বিদেশে সুনাম ও সুখ্যাতি।
উত্তরবঙ্গের ভৌগোলিক সীমানায় অবস্থান করেও প্রতিষ্ঠানটির দৃষ্টি, ধারা ও মানে ধারণ করেছে আন্তর্জাতিকতার মহিমান্বিত বৈশিষ্ট্য। যার অন্তরালে প্রেরণার দীপশিখা হয়ে জ্বলছে একটি অমলিন স্বপ্ন: "দৃষ্টিতে বিশ্ব, ফিকিরে উম্মাহ; জ্ঞানে অগ্রণী, আমালে অগ্রগামী।"
শিক্ষাক্রম, পাঠ্যক্রম ও পাঠদান পদ্ধতির সর্বত্র উন্নতি ঘটানো ; আরবি ভাষা ও যুগ চাহিদাকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান|
উচ্চ এবং উচ্চতর শিক্ষাকে গবেষণামুখী করা, গবেষণার মাধ্যমে ইলম ও উম্মাহকে সমৃদ্ধ করা।
ইসলামের সঠিক উপস্থাপন ও প্রচার করা, ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা এবং সকল ভ্রান্ত বিশ্বাস ও মতবাদ থেকে ইসলাম ও উম্মাহকে সুরক্ষা প্রদান|
আদর্শবান, স্বাবলম্বী, ঐক্যবদ্ধ ও সমৃদ্ধ উম্মাহ নির্মাণে ভূমিকা রাখা এবং উম্মাহের কল্যাণে প্রজ্ঞাবান ও আমলদার আলিম তৈরি করা|
সমাজকল্যাণ ও সংস্কারে ভূমিকা রাখা এবং মানবতার সঠিক বিকাশ ঘটানো।
আত্মশুদ্ধি ও আত্মউন্নয়ন চর্চা, দক্ষতার বিকাশ ও মূল্যায়ন। প্রতিটি কাজে উৎকর্ষতা প্রদর্শন এবং দক্ষতার প্রমাণ রাখা।